কমলাভোগ মিষ্টি

বাঙালির উৎসব আর মিষ্টির সম্পর্ক চিরকালই সমানুপাতিক। এই পুজোর মরসুম জুড়ে তার চাহিদা একেবারে তুঙ্গে! দুর্গা পুজো, কালী পুজো হয়ে ভাতৃ দ্বিতীয়া। আদরের ভাইটির জন্য একটু বিশেষ রকমের মিষ্টির আয়োজন না করলে চলে! ‘শীতের কমলালেবু’ বাঙালির কাছে আবার চিরকালই একটা নস্টালজিক ব্যাপার। বেশ তো, এই উৎসবের আবহে কমলালেবুর আগাম স্বাদ-গন্ধ ছানার মিষ্টির মধ্যে পেলে মনটা কিন্তু “সাধু! সাধু!” করবেই।

দেখতে হুবহু রসগোল্লার মতো হলেও এর রঙ কমলা আর এর সঙ্গে মিশে আছে কমলালেবুর মিষ্টি গন্ধ। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জায়গাতে কমলাভোগের খোঁজ মিললেও এর আসল ঠিকানা কিন্তু আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট। কোনও রকম কৃত্রিম সুগন্ধী নয়। আসল কমলালেবুর খোসার গুঁড়ো দিয়ে এখানে তৈরি করা হয় এই মিষ্টি। ফলে এখানকার কমলাভোগের স্বাদও অন্যান্য জায়গার থেকে অনেকটাই খাঁটি।

উপকরণঃ
  • মিষ্টি তৈরির জন্যঃ
  1. এক লিটার ফুল ফ্যাট দুধ
  2. ১০০ গ্রাম টক দই
  3. ২টো মাঝারি সাইজের কমলালেবুর রস
  4. ১ টেবিল চামচ ময়দা
  5. পরিমাণমতো খাবার সোডা
  6. ১/২ চা চামচ কেশর ফুড কালার
  7. সামান্য ঘি
  • চিনির শিরা তৈরির জন্যঃ
  1. আড়াই কাপ চিনি
  2. পরিমাণমতো জল
  3. ৩টে এলাচ থেঁতো করা
  4. ১/২ চা চামচ কমলা লেবুর রস
প্রস্তুত পদ্ধতিঃ
  • প্রথমেই দই-এর সঙ্গে কমলালেবুর রস মিশিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এমনভাবে মিশ্রিত করবেন যাতে টক দই জমে না থাকে।
  • কড়াই গরম করে তাতে দুধ ঢেলে দিন। এবার এই দুধ ভালো করে ফোটাতে থাকুন। দুধ ফুটে উঠলে তাতে মিশ্রিত করে রাখা দই ঢেলে দিন। এবার অল্প আঁচে দুধ ফোটাতে থাকুন ও হাতা দিয়ে নাড়তে থাকুন, যাতে নীচে পুড়ে না যায়। কিছুক্ষণ পর দেখবেন দুধ কেটে ছানায় পরিণত হয়েছে।
  • এবার এই ছানাকে পরিষ্কার সুতির কাপড়ে ঢেলে বেঁধে রেখে দিন ঘণ্টা খানেক, যাতে ছানা থেকে জল ঝরে শুকিয়ে যায়।
  • জল ঝরে গেলে ছানাকে পরিষ্কার ও মসৃণ মেঝেতে রেখে তাতে ময়দা, খাবার সোডা, কেশর ফুড কালার, সামান্য ঘি দিয়ে হাতের সাহায্যে ভালো করে চটকে মেখে নিন। যাতে ছানাটি একেবারে মসৃণ হয়ে যায়।
  • এবার এই ছানাকে হাতে গোল গোল করে মিষ্টির আকারে বানিয়ে নিন।
  • এবার কড়াইতে চিনি ও পরিমাণমতো জল ঢেলে তাতে এলাচ থেঁতো ও কমলা লেবুর রস দিয়ে ফোটাতে থাকুন। রস যখন টগবগ করে ফুটবে, তখন পাকানো কমলাভোগ চিনির রসের মধ্যে দিয়ে চাপা দিন। মাঝে মাঝে ঢাকনা খুলে নাড়তে থাকুন।
  • এইভাবে হাই ফ্লেমে পনেরো থেকে বিশ মিনিট ফোটাতে থাকুন, যতক্ষণ না পর্যন্ত কমলাভোগগুলি ফুলে উঠছে। ফুলে উঠলেই তৈরি কমলাভোগ।

Leave a Comment