ছানার জাফরানি রসমালাই

রসমালাই এমন একটি খাবার, যা দেখলেই জিভে জল চলে আসে। ছোট-বড় সবার পছন্দের তালিকায় রয়েছে এই খাবার। এর আগে আমরা দোকানের রসমালাই খেয়েছি। কিন্তু বাসায় তৈরি জাফরানি রসমালাই ও গুঁড়া দুধের রসমালাই খাইনি অনেকেই। তাহলে দুটি রেসিপি জেনে নিন সহজেই।

উপকরণ
ছানা তৈরি
১ লিটার দুধ(পুর্ন ননীযুক্ত)
৩ টেবিল চামচ করে সিরকা(ভিনেগার) + পানি
১ চা চামচ ময়দা
স্পঞ্জ মিষ্টি তৈরি
১ কাপ চিনি
৪ কাপ পানি
২ টি এলাচ
মালাই তৈরি
১ কেজি দুধ
চিনি – স্বাদ অনুযায়ী
৩-৪ টেবিল চামচ অথবা প্রয়োজন মত কন্ডেন্সড মিল্ক
১ চিমটি জাফরান

ছানার জাফরানি রসমালাই

পদ্ধতি
দুধ জ্বাল দিয়ে নিন। বলক উঠলে চুলা অফ করে দিন । ভালভাবে দুধ ফুটিয়ে নিবেন। ঘন করার দরকার নেই।
চুলা অফ করে ভিনেগার আর পানি মিক্স করে অল্প অল্প করে ঢালতে থাকুন।
ভিনেগার দিবেন আর চামচ দিয়ে আস্তে আস্তে নাড়তে থাকবেন।
ছানা কাটানো হয়ে গেলে ছানা পাতলা সুতির কাপড়ের উপর ঢেলে নিন।
ভাল করে ধুয়ে নিন যাতে ভিনেগারের ফ্লেভার না আসে। হালকা চিপে পানি ফেলে দিন। বেশি চাপবেন না এতে মিষ্টি শক্ত হয়ে যায়।
৩০ মিনিট ঝুলিয়ে রাখুন। খেয়াল রাখতে হবে যাতে ছানা বেশি শুকিয়ে না যায় ।
৩০ মিনিট পর ছানা ছড়ানো পাত্রে মেলে দিন।
ফ্যানের নিচে ৭-৮ মিনিট রেখে দিন। বেশি ভেজা ভেজা না থাকলে ফ্যানের নিচে দেয়ার প্রয়োজন নেই। বাড়তি পানি শুকিয়ে গেলে ময়দা দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে হাত দিয়ে চেপে চেপে মেখে ছানাটা মিহি করে নিন। ৫-৭ মিনিটের বেশি ছানা মাখবেন না।
এবার মাখানো ছানা হাত দিয়ে চেপে চেপে শেপ ঠিক করে বল তৈরি করুন ।
১ কাপ চিনি, এলাচ ও ৪ কাপ পানি এক সাথে বড় একটি পাত্রে নিয়ে চুলায় অল্প আচে জ্বাল দিন । আঁচ বাড়িয়ে দিন। চিনি গলে বলক উঠলে একদম কমিয়ে দিন । ছানার বল গুলো আস্তে আস্তে সিরাতে ছেড়ে দিন । কয়েক সেকেন্ড পর ঢাকনা দিয়ে ৫ মিনিট এর জন্য ঢেকে দিন ফুটে উঠলে জ্বাল মাঝারি আঁচের থেকে সামান্য কমিয়ে দিন ।
২০-২৫ মিনিট এভাবে ফুটাবেন । মিষ্টি নাড়াচাড়া করবেন না। মিষ্টি হয়ে গেলে নামিয়ে রেখে দিন ।
এবার দুধ জ্বাল দিতে হবে মালাই এর জন্য। একদিকে মিষ্টি সিরায় ফুটবে আরেকদিকে দুধ জ্বাল দিলে ভালো হয়। সিরা থেকে মিষ্টি নামানোর ৪-৫ মিনিটের মধ্যে দুধে দিয়ে দিলে ভাল হয়।
দুধ জ্বাল দিয়ে অল্প ঘন করে নিন । মাঝেমধ্যে নাড়ুন। না নাড়লে দুধের উপর মালাই মানে সর পরবে।জ্বাল দিয়ে অর্ধেক এর সামান্য বেশি রাখুন ।
দুধ ঘন হয়ে আসলে কন্ডেন্সড মিল্ক ও জাফরান দিয়ে নাড়তে থাকুন ।
স্পঞ্জ মিষ্টি গুলো সিরা থেকে তুলে দুধের মধ্যে দিয়ে দিন ।
সব মিষ্টি এভাবে দেয়া হয়ে গেলে ৪-৫ মিনিট ফুটিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে নিন ।
৩-৪ ঘন্টা পরে ভিতরে দুধ ঢুকে আরো নরম হয়ে যাবে। এবার ২-৩ ঘন্টা ফ্রিজ এ রেখে পরিবেশন করুন দারুন মজার জাফরানি রসমালাই।


টিপস:
ভালো মানের বা খাঁটি দুধ রসমালাইয়ের স্বাদ দ্বিগুণ করে দিতে পারে।
ভিনেগারের সঙ্গে অবশ্যই পানি যোগ করতে হবে।
ফুটন্ত দুধে ভিনেগার দিলে ছানা শক্ত হয়ে যায়। হালকা ঠাণ্ডা করে দুধের মধ্যে ভিনেগার ও পানির মিশ্রন যোগ করলে ছানা নরম হবে।
ছানা থেকে পানি বের করার জন্য অতিরিক্ত চাপ দেওয়া যাবে না।
৫-৭ মিনিটের বেশি ছানা মাখানো যাবে না। তাহলে ফ্যাট বের হয়ে যাবে।
চিনির সিরাপ গাঢ় করা উচিত না।
ফুটন্ত সিরাপের মধ্যেই ছানার বল ছাড়তে হবে। অতিরিক্ত পানি যোগ করতে হলে ফুটন্ত গরম পানি যোগ করতে হবে।
ছানার বল সেদ্ধ ঠিক মতো হয়েছে কি না বোঝার জন্য বাটিতে ঠান্ডা পানি নিয়ে একটা বল ছেড়ে দিন। বল যদি নিচে ডুবে যায় তাহলে বোঝা যাবে সেদ্ধ হয়েছে।
রসমালাইয়ের দুধ খুব বেশি ঘন করা যাবে না।

ছানার জাফরানি রসমালাই
ছানার জাফরানি রসমালাই

গুড়া দুধের রসমালাই

উপকরণ
গুঁড়া দুধ—এক কাপ
ডিম—একটি (বড়)
ময়দা—এক টেবিল চামচ
বেকিং পাউডার—এক চা চামচ
ঘি—এক চা চামচ
মালাই তৈরি করার জন্য
তরল দুধ—দুই লিটার
চিনি—দেড় কাপ (স্বাদমতো)
এলাচ—পাঁচটি
বাদাম—এক মুঠো


রসমালাই তৈরির প্রণালি
প্রথমে গুঁড়া দুধে ঘি, ময়দা, বেকিং পাউডার ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর ডিম ভালো করে ফেটে দুধের মিশ্রণ মিশিয়ে ডো তৈরি করতে হবে, যেন বেশি শক্ত না হয়।
এবার হাতে ঘি মাখিয়ে পছন্দমতো আকারে গোল্লা তৈরি করে নিতে হবে, অবশ্যই গোল্লাগুলো ছোট করে তৈরি করবেন। কারণ দুধে ছাড়লে গোল্লা ফুলে দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
অন্য একটি পাত্রে মালাই করার জন্য দুই লিটার তরল দুধ জ্বাল দিয়ে এক লিটারের মতো করে আনতে হবে। এবার এর মধ্যে চিনি, এলাচ দিয়ে অল্প আঁচে চুলায় রাখতে হবে। যদি দুধ বেশি পাতলা মনে হয়, তাহলে সামান্য গুঁড়া দুধ মিশিয়ে দিতে পারেন।
মালাই হয়ে গেলে চুলার আঁচ মাঝারি করে সব গোল্লা দুধে একে একে দিয়ে দিতে হবে। ১০ মিনিট মাঝারি আঁচে চুলায় রেখে নামিয়ে ফেলতে হবে। কোনোভাবে বেশি নাড়াচাড়া করবেন না। ঠান্ডা হলে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে বাদাম দিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার রসমালাই।

Leave a Comment